হাওজা নিউজ এজেন্সি: আল্লাহ তাআলা আমাদের উদ্দেশে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছেন, “গুনাহ করো না।” এই একটিমাত্র নির্দেশই মানুষের জন্য সবচেয়ে বিস্তৃত, সর্বাঙ্গীন ও পরিপূর্ণ নৈতিক শিক্ষা।
যে ব্যক্তি জ্ঞানী বা শিক্ষক হিসেবে পরিচিত, কিন্তু নিজ জীবনে মিথ্যা, প্রতারণা বা বিভিন্ন গুনাহে লিপ্ত—তিনি কখনোই মানুষের প্রকৃত পথপ্রদর্শক হতে পারেন না। মানুষকে সঠিক পথে আনতে পারেন সেই-ই, যিনি নিজে সৎ, পবিত্র ও নৈতিকতার পথে অবিচল।
ইরানের বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন ও খ্যাতিমান নৈতিকতা শিক্ষক মরহুম আয়াতুল্লাহ আজিজুল্লাহ খোশওয়াক্ত (রহ.) তাঁর এক নৈতিকতা-দর্শনে “শিক্ষক নির্বাচন ও সত্যিকারের পথপ্রদর্শক” প্রসঙ্গে বলেন, মানুষ যখন শিক্ষক বা মুরশিদ খুঁজতে যায়, তখন প্রায়ই বিভ্রান্ত হয়—কার কথা মানবে, কার উপর ভরসা করবে, সত্যিকার পথ শেখার জন্য কার কাছে যাবে—এ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়ে।
এক্ষেত্রে মূল বিষয় হলো—সকল শিক্ষকের শিক্ষক, পরম পথপ্রদর্শক হলেন আল্লাহ তাআলা।
মহান আল্লাহ বলেন: “গুনাহ করো না।” এটাই সবচেয়ে বড়, সব শিক্ষাকে ছাপিয়ে যাওয়া এক সুস্পষ্ট নির্দেশ।
এত মহান, জ্ঞানী ও ক্ষমতাবান আল্লাহ তাআলা যখন আমাদের গুনাহ থেকে বিরত থাকতে বলেন, তখনো আমরা অনেক সময় তা শুনি না, গুরুত্ব দিই না এবং নিজের ইচ্ছানুসারে চলি।
আমরা বারবার শুনি, অনুভব করি, এমনকি প্রতিশ্রুতি দিই—এ গুনাহ আর করব না। তবুও কিছুদিন পর আগের ভুলেই ফিরে যাই। এতে বোঝা যায়—আমাদের ভেতরের সততা ও আত্ম-সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে।
যদি আমরা সত্যিই আন্তরিক হই, তবে মানতে হবে—প্রকৃত শিক্ষক আল্লাহই। তাকওয়া, আত্মসংযম, নৈতিকতা ও গুনাহ থেকে বাঁচার শিক্ষা তিনিই দিয়েছেন।
সুতরাং যে ব্যক্তি সত্যিকারের হেদায়াত চায়, তার করণীয় হলো—মানুষের নাম, খ্যাতি বা পরিচয়ের পেছনে দৌড়ানো নয়; বরং আল্লাহর নির্দেশকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং যত্নসহকারে পালন করা।
যতক্ষণ আমরা আল্লাহর বাণী শুনে তার অনুসরণ না করব, ততক্ষণ প্রকৃত হেদায়াত অর্জন সম্ভব নয়—যদিও বাহ্যিকভাবে আমরা শিক্ষক বা মুরশিদের দ্বারস্থ হই।
আপনার কমেন্ট